ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া ইলিশিয়া গরুবাজার নিলাম কার্যক্রমে আবারও হাইর্কোটের ৬ মাসের স্থগিত আদেশ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের ইলিশিয়া গরুবাজার নিলাম কার্যক্রমের উপর আবারও ৬ মাসের স্থগিত আদেশ দিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের হাইর্কোট বিভাগের একটি দ্বৈত বৈঞ্চ। এ সংক্রান্ত ২০১৭ সালে দায়েরকৃত একটি রিট মামলায় বাদিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইর্কোটের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোছাইন ও বিচারপতি মো.ইকবাল কবির সম্বনয়ে গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ গত ২২ জুলাই এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের কৌশলী হাইর্কোটের সিনিয়র আইনজীবি সুব্রত চৌধুরী।

জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ইলিশিয়া গরু বাজারটি ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে না বসাতে এবং নিলামের আওতায় না আনতে স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০১৭ সালে পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুর শুক্কুর বাদি হয়ে ১০জনকে বিবাদি করে উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা (নং ৩৮৪৬/১৭) দায়ের করেন। বাদিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইর্কোটের বিচারপতি এম.মোজাম্মেল হোসেন ও আমীর হোছাইন সম্বনয়ে গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ ২০১৭ সালের ২২ মার্চ মামলার শুনানী শেষে ইলিশিয়া গরু বাজারটির ইজারা কার্যক্রমের বিপক্ষে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন। একইসাথে আদালত বিবাদি ১০ জনের বিরুদ্ধে রুলনিশি জারি করেন।

অভিযুক্ত বিবাদিরা হলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রানালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রেভিনিউ ডেপুটি কালেকক্টর (আরডিসি), উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি), জেলা পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাকের আহমদ।

মামলার বাদি আবদুস শুক্কুর দাবি করেন, আদালতের স্থগিতাদেশ সংক্রান্ত আদেশ অমান্য করে নির্ধারিত তারিখের সাতদিন আগে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ তারিখে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তড়িগড়ি করে বাজারটি নিলাম দেন। তবে বাজারটি নিলাম দেয়ার ক্ষেত্রে ওইসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর এ সংক্রান্ত কোন ধরণের বিজ্ঞপ্তি সংবাদপত্রে প্রকাশ করেন। তাতে তিনি (ইউএনও) দরপত্র সংগ্রহের শেষ তারিখ ২৯ মার্চ এবং দরপত্র দাখিল ও খোলার শেষ তারিখ ৩০ মার্চ নির্ধারণ করেন। অথচ তিনি (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ওইসময় আদালতের আদেশের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নির্ধারিত তারিখের প্রায় ৭ দিন আগে অর্থ্যাৎ ওইবছরের ২৩ মার্চ তারিখে বাজারটি নিলাম দেন।

বাদি আবদুর শুক্কুর জানান, আদালতের প্রথম আদেশের অনুলিপির কপি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি), চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি এবং প্রশাসনের অপরাপর দপ্তর গুলোতে দাখিল করা হলে পরবর্তীতে নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

জানা গেছে, যেহেতু পশ্চিম বড়ভেওলা ইলিশিয়া গরু বাজারটি নিয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে সেহেতু বাজার থেকে খাসকালেশন করা বা নিলাম দেয়ার আইনী কোন এখতিয়ার নেই।

বাদিপক্ষের কৌশলী হাইর্কোটের সিনিয়র আইনজীবি সুব্রত চৌধুরী বলেন, রিট মামলার প্রেক্ষিতে হাইর্কোটের বিচারপতি এম.মোজাম্মেল হোসেন ও আমীর হোছাইন সম্বনয়ে গঠিত দ্বৈতবৈঞ্চ ২০১৭ সালের ২২ মার্চ ইলিশিয়া গরু বাজারটির ইজারা কার্যক্রমের বিপক্ষে প্রথমবার ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে বাদিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আরো দুইদফায় ৬ মাস করে স্থগিতাদেশ দেন।

তিনি বলেন, তিনদফা স্থগিতাদেশ মেয়াদ শেষে চলতি মাসে পুনরায় মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বাদিপক্ষ আদালতের কাছে নতুনভাবে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে হাইর্কোটের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোছাইন ও বিচারপতি মো.ইকবাল কবির সম্বনয়ে গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ মামলার শুনানী শেষে সর্বশেষ গত ২২ জুলাই নতুন আদেশ দিয়েছেন। আদেশে আদালত ইলিশিয়া গরুবাজারটির নিলাম কার্যক্রমের উপর আবারও ৬ মাসের জন্য স্থগিত আদেশ দিয়েছেন। ##

পাঠকের মতামত: